রজব
মাসের নফল ইবাদত ও ফযীলত
রজব
মাস আরবী চান্দ্র মাসের সপ্তম মাস। এ মাসটি দ্বিতীয় অর্ধাংশের প্রথম মাস। এ
মাসটিকে রাজাবুল মুরাজ্জাবও বলা হয়। এ মাসটিও অতিশয় পবিত্র। এ মাসটিতেই বিশ্বের
মহাবিশ্ময়ের ঘটনা মেরাজ শরীফ সংঘটিত হয় ২৭ রজব রাত্রিতে। তাই এই মাসটিও মহা ফযীলতের
ও সওয়াবের মাস। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে রেওয়ায়েত
আছে, হযরত নবী করীম (সাঃ) যখন রজবের চাঁদ দেখতেন তখন তিনি দুহাত প্রসারিত করে এ
দোয়াটি পড়তেনঃ
اللهم بارك لنا فى
رجب و شعبان و بلغنا الى شهر رمضان -
উচ্চারণঃ
আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফী রাজাবা ওয়া শা’বানা, ওয়া বাল্লিগনা ইলা শাহ্রি
রামাযান।
রজব
মাসের পরবর্তী মাস হলো শা’বান মাস। এর পর পরই আগমন হয় রমযান মাসের। রমযান মাস যেন
মহাপবিত্র ও মহা সম্মানিত অতিথি মাস। আর রজব এবং শা’বান মাসদ্বয় যেন রমযানের
আগমন-অপেক্ষারত দুই বার্তাবাহক মাস। রাজা ও বাদশাহগণের কোথাও আগমনের পূর্বে যেমন
তাদের উপযুক্ত স্থান ও অবস্থানের ব্যবস্থা করার জন্য পূর্বাহ্নে বিশেষজ্ঞ প্রেরণ
করা হয়ে থাকে, পবিত্র রমযান মাসের আগমনের পূর্বেও তেমনি রজব ও শা’বান মাসদ্বয়কে
পাঠানো হয়ে থাকে। রাজা ও বাদশাহগণের পূর্বাহ্নে প্রেরিত বিশেষজ্ঞগণের প্রতি
স্থানীয় জনসাধারণ যে রূপ সদ্ব্যবহার প্রদর্শন করে থাকে, বার্তাবহক রজব ও শা’বান
মাসদ্বয়ের প্রতিও অনুরূপভাবে আল্লাহ্ প্রেমিক মো’মীন ও মো’মীনাতগণের ইবাদত-বন্দেগী
করে রমযান মাসকে সম্মান প্রদর্শন করা উচিত। এতে বহুতই সওয়াব আছে ও আল্লাহ্
তা’আলার নৈকট্য লাভের অন্যতম উপায়।
রজব
মাসের নফল নামায সমূহ
রজব
মাসের ৫ টি রাত অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ। সেগুলো হলো ১, ১৫, ২৮, ২৯ ও ৩০ তারিখের
রাত্রি। উক্ত রাতগুলোতে ইবাদত বন্দেগী করা পূণ্যের কাজ। আগ্রহী পাঠক-পাঠিকাগণ
নিম্নে বর্ণিত নিয়মানুযায়ী ইবাদত-বন্দেগী করে অশেষ পূণ্যের অধিকারী হবেন, এতে
সন্দেহের অবকাশ নেই।
১। “খোলাসাতুল
আখবার” নামক কিতাবে আছে, যে ব্যক্তি রজব মাসের ১, ১৫ এবং শেষ তারিখে গোসল করবে, সে
ব্যক্তি সদ্য জন্মলাভ করা শিশুর মত পাক, পবিত্র ও বেগুনাহ্ হবে।
২। এ
মাসের ১ তারিখ মাগরিবের নামাযের পর যে ব্যক্তি দু-দু রাকাত করে ২০ (বিশ) রাকাত
নামাযের প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতেহা একবার ও সূরা এখলাছ ৩ বার করে পাঠ করে, তবে
সে ইহকাল ও পরকালে বিশেষ কল্যাণের অধিকারী হবে এবং বালা মুসীবত দূর হবে।
অন্য
এক বর্ণনায় আছে, নবী পাক (সাঃ) এরশাদ করেছেনঃ হযরত জীব্রাইল আমীন আমাকে এ নামায
সম্বন্ধে সংবাদ দিয়ে বলেছেন যে, হে আল্লাহর হাবীব! প্রকৃত মোমীন ব্যতীত এ নামায
অন্য কেউ পাঠ করে না, আর কাফের মুশরেক ব্যতীত আর কেহ এ নামায ত্যাগ করে না। অতএব
উপরোক্ত নামাযের ফযীলত ও সওয়াবের আশা করলে পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে হবে। আর পরিপূর্ণ
ঈমানদার হতে হলে যথাস্থানে বর্ণিত শর্তসমূহ পরিপূর্ণভাবে পালন করতে হবে।
শব-ই-মে’রাজ
পরম
করুণাময় সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ তাআলা হযরত রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর নবুয়তের দশম বর্ষে
তাঁর পঞ্চাশ বত্সর তিন মাস বয়োঃক্রমকালে রজব মাসের ২৬ দিবাগত রাত্র ২৭ রজব তাঁর
পিয়ারা হাবীব হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সাক্ষাত্ ও কর্থাবার্তা
বলার উদ্দেশ্যে জিব্রাইল ফেরেশতার সাহায্যে স্বীয় সন্নিধানে উপস্থিত করেন, এরই নাম
মেরাজ।
********************